19
বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে না, বরং পুনর্গঠনের পথে
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:০১ এএম, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি যেভাবে হতাশামূলক আলোচনা চলছে, বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে, তার বড় একটি অংশ অতিরঞ্জিত এবং আংশিক তথ্যের ভিত্তিতে গঠিত।
কিছু অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণ ইচ্ছাকৃতভাবে বিষয়গুলো এমনভাবে উপস্থাপন করছে, যা বাস্তব চিত্রকে পুরোপুরি তুলে ধরে না।
আসলে যেটা ঘটছে তা অর্থনৈতিক ধস নয়, বরং দীর্ঘদিনের কাঠামোগত সমস্যাগুলোর একটি প্রয়োজনীয় সংশোধন প্রক্রিয়া।
নির্বাচনের আগের সরকারের রেখে যাওয়া আর্থিক অস্থিতিশীলতা এবং অনিয়মের জটিলতা থেকেই এই অবস্থার জন্ম।
বিনিয়োগ, ঋণ ও ব্যাংকিং খাতে যে চ্যালেঞ্জগুলো দেখা যাচ্ছে, সেগুলো নতুন নয়। এগুলো বহুদিনের জমে থাকা দুর্বলতা, যেগুলো এখন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিশেষ করে খেলাপি ঋণের হার বেড়ে যাওয়াকে অনেকেই নতুন সংকট হিসেবে দেখলেও, আসলে স্বচ্ছ হিসাববিধি অনুসরণ করার ফলে প্রকৃত অবস্থা প্রকাশ পাচ্ছে।
অনেক বছর ধরেই বলা হয়ে আসছে, আগে সরকারের পক্ষ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর ওপর চাপ ছিল, যাতে তারা খেলাপি ঋণ গোপন রাখে, শ্রেণিকরণে ছাড় দেয়, কিংবা বারবার পুনঃতফসিল করে। এতে ব্যাংক খাত বাইরে থেকে সুস্থ দেখালেও ভেতরে ছিল দুর্বল।
তাই আজকের এই ঋণ সংকট, প্রকৃতপক্ষে আগের ভুলগুলোকে শোধরানোর চেষ্টা।
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ২০২৫ সালের শেষ দিকে নেমে আসে ৬.২৯ শতাংশে, যেখানে আগের বছরগুলোতে তা ছিল দুই অঙ্কের। সেই উচ্চ প্রবৃদ্ধিও অনেকটা রাজনৈতিক প্রভাব ও অদক্ষ খাতে ঋণ বিতরণের ফল ছিল, যার বাস্তব আর্থিক লাভ ছিল সামান্য।
অনেক ঋণই প্রকৃতপক্ষে বিদেশে সম্পদ কিনতে বা অফশোর অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে ব্যবহৃত হয়েছে। এখন ব্যাংকগুলো আরও সতর্ক। ফলে ঋণের পরিমাণ কমলেও গুণগত মান বেড়েছে।
অর্থনৈতিক ভিত্তি দুর্বল রেখে প্রবৃদ্ধি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। আজকের এই ভারসাম্যমূলক পরিবর্তন এক ধরনের সুস্থতার লক্ষণ।
অর্থনৈতিক সংশোধনের আরেকটি দিক হচ্ছে সরকারি খাতে ব্যয়সংযম ও ব্যাংক নির্ভরতা কমানো।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সরকার ব্যাংকগুলো থেকে ৫০০ কোটির বেশি টাকা ফেরত দিয়েছে। এক বছর আগেও এই সময়ে তারা ব্যাংক খাত থেকে ১৫ হাজার কোটির বেশি ঋণ নিয়েছিল।
এই পরিবর্তন সুদহার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করছে এবং বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ সহজলভ্য করছে।
বিদেশি বিনিয়োগ নিয়েও হতাশার কোনো জায়গা নেই। রাজনৈতিক উত্তেজনা সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ।
যেখানে অনেক দেশে রাজনৈতিক রূপান্তরের পর বিনিয়োগ হ্রাস পায়, সেখানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু টিকে থাকেনি, বরং তারা তাদের আয়ও পুনঃবিনিয়োগ করেছে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ২০২৪ সালের মাঝামাঝি যেখানে তা ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল, এক বছর পরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ বিলিয়নের ওপরে।
প্রবাসী আয় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড ৩০.৩৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়, যা ২৬.৮ শতাংশ বৃদ্ধি। এই বৃদ্ধির পেছনে বড় কারণ হলো ব্যাংকিং খাতে আস্থা বৃদ্ধি, হুন্ডি দমন, এবং বাজারভিত্তিক বিনিময় হার ব্যবস্থা।
অনেক প্রবাসী যারা আগে অনানুষ্ঠানিক পথে টাকা পাঠাতেন, এখন বৈধ পথে পাঠাচ্ছেন।
মূল্যস্ফীতি অবশ্যই বড় চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের ৮ শতাংশের ওপরে মূল্যস্ফীতি এখন সর্বোচ্চ।
তবে এর পেছনের কারণ শ্রীলঙ্কার মতো আর্থিক ধস নয়। বরং, সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ে সংকট, বাজারে কিছু বাকি থাকা বিকৃতি এবং পূর্বের অতিরিক্ত মুদ্রা সরবরাহ এর জন্য দায়ী।
এটি অবশ্যই কঠিন, তবে নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়।
দারিদ্র্যের হার নিয়েও বিভ্রান্তি রয়েছে। প্রায়ই যে ২৮ শতাংশ হার উল্লেখ করা হয়, তা একটি ছোট পরিসরের বেসরকারি গবেষণার তথ্য।
শ্বব্যাংকের পূর্বাভাস বলছে, মূল্যস্ফীতির মধ্যেও চলতি অর্থবছরে দারিদ্র্য কিছুটা কমতে পারে।
এই মুহূর্তে বাংলাদেশের জন্য মূল লড়াই শুধু প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার নয়। বরং বহু বছরের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি এবং প্রশাসনিক জটিলতা ভেঙে ফেলার সময় এটা। এই সবই দরিদ্র মানুষের জন্য এক ধরনের অদৃশ্য কর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুতরাং, বাংলাদেশ আজ কোনো ধসের মধ্যে নেই। বরং, এক কঠিন কিন্তু প্রয়োজনীয় শুদ্ধিকরণের পথ বেছে নিয়েছে।
ব্যাংক খাতের দুর্বলতা, ঋণ সংকোচন, মূল্যস্ফীতি—এসব সমস্যা বহুদিনের। এখন সেগুলো মোকাবিলার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
অন্য কোনো রাজনৈতিক রূপান্তরের পরে আমরা এমন দৃঢ় রিজার্ভ, রেমিট্যান্সে রেকর্ড, এফডিআইতে ইতিবাচক প্রবণতা এবং ব্যয়সংযম খুব কমই দেখি।
এই লক্ষণগুলো স্থবিরতা নয়, বরং ভবিষ্যতের জন্য স্থিতিশীল, স্বচ্ছ ও টেকসই অর্থনীতির ভিত্তি।
তবে এই শুদ্ধিকরণ শেষ পর্যন্ত সফল হবে কি না, তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর—বিশেষ করে ব্যাংক খাত সংস্কারের প্রশ্নে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ ভেঙে পড়ছে না, বরং একটি ধৈর্যশীল, পরিকল্পিত সার্জারির মধ্য দিয়ে চলছে। এখন প্রশ্ন একটাই—এই অপারেশন শেষ করা যাবে তো?
ফয়সল মাহমুদ: বর্তমানে বাংলাদেশ হাইকমিশন, নয়াদিল্লিতে প্রেস মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ফিনটেক ম্যাগাজিনের নির্বাহী সম্পাদক ছিলেন।
মন্তব্যঃ
দুঃখিত, কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি!
নতুন মন্তব্য করুন:
- জামায়াতে যোগ দিলেন অর্ধশতাধিক বিএনপি–জাপা নেতাকর্মী
- জাপা ও জেপির নেতৃত্বে বৃহত্তর রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশ ৮ ডিসেম্বর
- স্বৈরাচার পতন দিবস আজ
- আমার হায়াত কমিয়ে হলেও খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দেন
- জোট গঠনের বিষয়ে যা বললেন সারজিস
- বিএনপির সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করল বাংলাদেশ লেবার পার্টি
- ১০ ডিসেম্বর তফসিল নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির সাক্ষাৎ
- বাংলাদেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে না, বরং পুনর্গঠনের পথে
- খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে যেসব আধুনিক সুবিধা
- দেশে এল তারেক রহমানের ২ কোটি ৭৬ লাখ টাকার গাড়ি, বিআরটিএতে নিবন্ধন সম্পন্ন
- পুলিশ কমিশন গঠন হচ্ছে, অধ্যাদেশ অনুমোদন
- নিবন্ধন পেতে যাচ্ছে আম জনতার দল, চেয়েছে প্রজাপতি প্রতীক
- অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রণ পেলেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
- পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন কমান্ডো এনএসজিসহ ২৪ ভারতীয়
- সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
- আবারও ভূমিকম্পে কাঁপল বাংলাদেশ
- আপনাদের ভালোবাসায় ছিলাম, সারাজীবন থাকতে চাই
- খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা
- খালেদা জিয়ার অসুস্থতা হাসিনার কারণে: রিজভী
- ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সব কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে রিট
- ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপর গুলির ঘটনার পর প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রতিক্রিয়া
- ফ্যাশন গ্যালারিতে চলছে ঈদ স্পেশাল অফার
- আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম
- 🇧🇩 মেলবোর্ন বোরোতে আবারও বাংলাদেশি নেতৃত্বের জয়জয়কার — মেয়র পদে পুনর্নির্বাচিত মাহবুবুল আলম তৈয়ব 🇧🇩
- নেক্সটজেনের উদ্যোগে চাঁদ রাত উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি
- বাংলাদেশ ট্যাক্সি সোসাইটি অব ফিলাডেলফিয়া’র নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা
- কুষ্টিয়া সোসাইটি অফ পেনসিলভেনিয়ার নতুন কমিটির আত্মপ্রকাশ
- “৯০ দশকের অসাধারন কিছু স্মৃতি নিয়ে আমার লেখা”
- দিনাজপুর সোসাইটি অব পেনসিলভেনিয়ার ইফতার মাহফিল সম্পন্ন
- মা….
- বৃহত্তর ময়মনসিংহ সোসাইটি অব পেনসিলভেনিয়ার নতুন কমিটি গঠিত
- মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও পতাকা উত্তোলন, ফিলাডেলফিয়া সিটি,পিএ
- “টেম্পেল ইউনিভার্সিটির সম্মাননা পেয়েছেন আনিসা আরা”
- 🇧🇩যুক্তরাষ্ট্রের আপার ডার্বি নির্বাচনে তিন বাংলাদেশি প্রার্থীর জয়জয়কার 🇧🇩
- ইসলামিক সেন্টার অফ দেলোয়ার কাউন্টি ব্যাডমিন্টন স্কোয়াড ফাইনাল রাউন্ড
- ৫০ বছরে সবচেয়ে লম্বা সূর্যগ্রহণ
- “স্বপ্ন যাবে বাড়ি আমার”
- “নেক্সটজেনের উদ্যোগে চাঁদ রাত উৎযাপিত”
- মুনা সেটার অব আপার ডার্বিতে খতমে তারাবী সম্পন্ন
- যুক্তরাস্টের ফিলাডেলফিয়া শহরে কৃষ্ণাঙ্গের ছুড়িকাঘাতে গুরুতর আহত এক বাংলাদেশী





